বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:৩৫ অপরাহ্ন

ঝিনাইদহে ৪০ মণ ওজনের যুবরাজকে দেখতে উৎসুক জনতার ভীড়!

All-focus

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি॥

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামে প্রায় ৪০ মণ ওজনের এক যুবরাজকে দেখতে উৎসুক জনতার ভীড় জমেছে। প্রতিদিন শত শত মানুষ আসছে যুবরাজের বাড়িতে। তার সঙ্গে সেলপি উঠানোরও হিড়িক চলছে। অনেকে আবার যুবরাজের সঙ্গে তোলা তার ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এসব কারনে যুবরাজকে দেখার ভীড় বেড়েই চলেছে।

দূর্গাপুরের এই যুবরাজ কোনো রাজপুত্র নন, শাহ আলম মিয়ার একটি ফ্রিজিয়ান ষাঁড়। শখ করে যার নাম রাখা হয়েছে যুবরাজ। দূর থেকে দেখলে মনে হবে এটা একটা হাতি। ইতিমধ্যে পাইকাররা যুবরাজের দাম হেকেছেন ১৮ লাখ টাকা। আর শাহ আলম ২৫ লাখ দাম চাচ্ছেন, কিছু কম হলেও বিক্রি করবেন তিনি। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা মোঃ শাহ আলম মিয়ার পৈত্রিক বাড়ি মাদারিপুর জেলার শিবচর উপজেলায়। প্রায় ৭ বছর পূর্বে এক বন্ধুর হাত ধরে এই গ্রামে চলে আসেন। বর্তমানে এখানে স্থায়ী ভাবে বসবাস করেন। স্কুল ও কলেজ জীবন শিবচরে কেটেছে তার। পরে অর্থ উপার্যন করতে বিদেশে যান। ৫ বছর সিঙ্গাপুরে থাকার পর দেশে ফিরে আসেন। এরপর বিদেশের সঙ্গে ব্যবসা শুরু করেন। এই ব্যবসার প্রয়োজনে ৩৫ টি দেশে ঘুরেছেন তিনি। পরে ঝিনাইদহে এসে গড়ে তোলেন আব্দুল্লাহ এগ্রো এন্ড ডেইরী ফার্ম। প্রায় ৩৮ লাখ টাকা ব্যয় করে বাড়ি এবং বাড়ির সঙ্গে এই ফার্ম প্রতিষ্টা করেছেন। ৩ বছর হলো এই খামারে গরু লালন-পালন করেন। বর্তমানে তিনি এই খামারেই সময় দেন। এগুলো লালন-পালন করে যা আয় করেন তা দিয়ে সংসার চালান।

তিনি আরও জানান, বর্তমানে তার খামারে ৭ টি গরু আছে। সবগুলো গরুর আলাদা আলাদা নাম আছে। তিনি সবাইকে নাম ধরেই ডাকেন। আসন্ন ঈদুল আযাহায় তিনি যে তিনটি গরু বিক্রি করবেন সেগুলোর নাম যুবরাজ, রবি ও সাহেব। বাকি চারটা আগামী বছর বিক্রি করবেন বলে জাানন। তিনি বলেন, গরুগুলো তার খুব আদরের। তাদের সবকিছু নিজ হাতেই করেন। খাবার দেওয়া, ময়লা পরিষ্কার, গোসল দেওয়া সবই নিজে করেন। তাকে সহযোগিতা করার জন্য তিনজন কর্মচারি আছেন। গরুগুলো অনেক বড় হওয়ায় সব কাজ করতে পারেন না। তাই অন্যদের সহযোগিতা নিতে হয়। তাদের চিকিৎসা, তাপমাত্রা ঠিক রাখা সহ সার্বক্ষনিক সতর্ক থাকতে হয়।

শাহ আলম জানান, তিন বছর আগে তিনি এই খামার করেছেন। যুবরাজকে তিনি খামার শুরুর সময় মাত্র ৬ মাস বয়সে নিয়েছিলেন। এখন তার বয়স ৩ বছর ৬ মাস। এই সময়ে পরিমিত খাবার আর যত্নে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, যুবরাজকে খরিদ করতে ইতিমধ্যে পাইকাররা আসছেন। তারা ১৮ লাখ টাকা পর্যন্ত মুল্য দিয়েছেন। তিনি আরেকটু অপেক্ষা করছেন। প্রয়োজনে হাটে উঠাবেন এবং ২৫ লাখ টাকা দাম চাইবেন। এ ক্ষেত্রে কিছু কম হলেও বিক্রি দেবেন। তিনি বলেন, যুবরাজের পেছনে এখন পর্যন্ত তার ৯ থেকে ১০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। প্রতিদিন যুবরাজের খাবারের জন্য খরচ হচ্ছে প্রায় ২ হাজার টাকা।

ওই গ্রামের বাসিন্দা হাফিজুর রহমান জানান, শাহ আলম মিয়া গরুর সঙ্গে কথা বলে। সে নাম ধরে ডাক দিলেই গরু বুঝতে পারে। মালিক যে নির্দেশ দেন সেটাই সে পালন করে। তিনি বলেন, এই যুবরাজ তাদের গ্রামটি অনেক এলাকার মানুষের কাছে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে। দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসছেন যুবরাজকে দেখতে। ঝিনাইদহ শহর থেকে আসা দর্শনার্থী শাহিনুর রহমান টিটো জানান, তাদের এলাকার অনেকে যুবরাজকে দেখে গিয়ে গল্প করছিলেন। এই গল্প শুনে তিনিও এসেছেন। তিনি বলেন, গরুটি দেখে গরু মনে হয়নি, মনে হয়েছে এটি একটি হাতি। তিনি তার জীবনে এমন গরু কখনও দেখেননি।

এ বিষয়ে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ হাফিজুর রহমান জানান, তারা গরুটির ওজন আনুমানিক ৩৫ মন বলে ধারনা করছেন। ঈদ আসতে এখনও কিছুদিন বাকি আছে। এরই মধ্যে আরো কিছু ওজন বাড়বে বলে মনে করছেন। অবশ্য গরুর ওজন আরো বেশি হবে বলে তিনি দাবি করেছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com